University Education Commission (1948-49)
University Education Commission (Radhakrishnan Commission, 1948–49)
ভূমিকা (Introduction)
১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতার পর দেশে শিক্ষা সংস্কারের জরুরি প্রয়োজন দেখা দেয়।বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থা পুনর্গঠন করতে প্রয়োজন ছিল পরিকল্পিত সমীক্ষা।১৯৪৮ সালের ১ নভেম্বর ভারত সরকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন গঠন করে।এই কমিশনের সভাপতি ছিলেন ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন, যিনি পরবর্তীতে ভারতের রাষ্ট্রপতি হন।কমিশনের লক্ষ্য ছিল উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন, গবেষণা বৃদ্ধি, আধুনিক ও দেশের প্রয়োজনমূখী পাঠ্যক্রম প্রণয়ন।
সদস্যবৃন্দ (Members)
ভারতীয় সদস্য:
1. ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন – সভাপতি
2. ড. নির্মল কুমার সিদ্ধান্ত – সম্পাদক
3. ড. তারাচাঁদ – সদস্য
4. ড. জাকির হোসেন – সদস্য
5. ড. লক্ষ্মণস্বামী মুদালিয়ার – সদস্য
6. ড. মেঘনাথ সাহা – সদস্য
7. ড. করম নারায়ণ বহল – সদস্য
বিদেশি সদস্য:
1. ড. জেমস এফ. ডাফ
2. জ. আর্থার মরগ্যান
3. ড. টিগার্ট
কমিশনের উদ্দেশ্য (Terms of Reference)
1. বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ।
2. বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো, কার্যধারা ও কেন্দ্র-রাজ্য সরকারের সম্পর্ক পর্যালোচনা।
3. বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সমস্যার সমাধান।
4. উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষাগত মান নির্ধারণ।
5. পাঠ্যক্রম ও শিক্ষার মাধ্যম সংক্রান্ত সুপারিশ।
6. শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও প্রবেশপথ নির্ধারণ।
7. ভারতীয় সংস্কৃতি, সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন ও চারুকলা সমৃদ্ধিকরণ।
8. নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও গবেষণাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা।
9. ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা।
10. অধ্যাপকদের সুযোগ-সুবিধা ও পদোন্নতি ব্যবস্থা।
11. বিশ্ববিদ্যালয় নিয়মশৃঙ্খলা ও ছাত্রকল্যাণ।
সুপারিশ (Recommendations)
উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
1. নেতৃত্ব বিকাশ: শিক্ষার্থীরা প্রশাসন, রাজনীতি ও সমাজে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হোক।
2. দেশীয় সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও সমৃদ্ধি।
3. প্রজ্ঞাবান অগ্রদূতদের সন্ধান: বিশ্ববিদ্যালয় হবে জাতীয় অন্তরজীবনের কেন্দ্র।
4. জ্ঞান ও বিচক্ষণতার বিকাশ।
5. সৌভ্রাতৃত্ব ও স্বাধীন মত প্রকাশ।
6. সাধারণ, যান্ত্রিক ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা উন্নয়ন।
7. সমাজদর্শনের ভিত্তিতে শিক্ষার লক্ষ্য নির্ধারণ: সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, সমঅধিকার ও সৌভ্রাতৃত্ব।
2 পাঠ্যক্রম (Curriculum)
1. প্রথম ডিগ্রি: সর্বভারতীয় ভাষা, ইংরেজি, মাতৃভাষা বা প্রাচীন ভাষা , মানবিক বিদ্যা, সমাজবিজ্ঞান, ভৌত ও জীবনবিজ্ঞান
2. বৃত্তিমূলক শিক্ষা: কৃষি, বাণিজ্য, শিক্ষাতত্ত্ব, ইঞ্জিনিয়ারিং, আইন, চিকিৎসা
3. প্রয়োগিক শিক্ষার সংযুক্তি: তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক শিক্ষা সমন্বিত
4. মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সমন্বয়
3 শিক্ষক (Teachers) :
শিক্ষক জ্ঞানপিপাসু ও আদর্শ চরিত্রের হতে হবে।
কার্যকাল: ৬০ বছর, যোগ্য ও মেধাবী হলে ৬৪ বছর পর্যন্ত।
পদোন্নতি: যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষক (Research Fellow) থাকবে।
4 পরীক্ষা ও মূল্যায়ন (Examination & Evaluation)
1. বস্তুধর্মী পরীক্ষা প্রশ্নপ্রণয়ন।
2. মৌখিক পরীক্ষা রাখার সুপারিশ।
3. গ্রেস নম্বর প্রথা বাতিল।
4. অভ্যন্তরীণ কাজের ভিত্তিতে এক-তৃতীয়াংশ নম্বর প্রদান।
5. উত্তীর্ণের মান: ১ম শ্রেণি ৭০%, ২য় শ্রেণি ৫৫%, ৩য় শ্রেণি ৪০%।
5 শিক্ষার মাধ্যম (Medium of Instruction)
আঞ্চলিক ভাষা + ফেডারেল ভাষা বা হিন্দি + ইংরেজি
ত্রিভাষা নীতি: মাতৃভাষা/আঞ্চলিক, হিন্দি/ফেডারেল, ইংরেজি
6. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন (University Administration)
স্নাতক স্তর: রাজ্য সরকার; স্নাতকোত্তর ও গবেষণা: কেন্দ্রীয় সরকার
কমিটি: আচার্য, উপাচার্য, সিনেট/কোর্ট, সিন্ডিকেট, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল, ফ্যাকালটিস, বোর্ড অব স্টাডিজ, ফিনান্স কমিটি, সিলেকশন কমিটি
7. অর্থ সংস্থান (Financial Arrangements)
রাষ্ট্র বহন করবে:
1. Building Grant
2. Equipment Grant
3. Hostel Grant
4. Library Grant
5. শিক্ষক বেতন ও অন্যান্য সুবিধা
6. বৃত্তিমূলক গবেষণা
7. বিদেশে উচ্চশিক্ষা
8. প্রযুক্তি গবেষণা
বার্ষিক অতিরিক্ত ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ
8 গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় (Rural University)
1. শিক্ষার চার স্তর: প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কলেজীয়, বিশ্ববিদ্যালয় স্তর
2. আবাসিক ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক
3. পাঠ্যক্রম গ্রামীণ জীবন ও সমাজ-অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত
4. বুনিয়াদি শিক্ষা (Basic Education) বিশেষ গুরুত্ব
5. পরবর্তীতে NCRHE (1956) দ্বারা Rural Institutes বাস্তবায়ন
Comments
Post a Comment